মহা সৌভাগ্যময় কিছু পেলে আপনার অনুভূতি কেমন হবে...
আমাদের আশে-পাশে অনেকেই আমেরিকার ডিভি লটারি পেয়েছেন। যিনি লটারি জিতেন, তার অনুভূতির প্রথম প্রকাশ হয়, প্রিয়জনসহ সবাইকে খবরটা জানানো। তারপর চলে প্রস্তুতি, কিভাবে ইংরেজি ভাষাটা দ্রুত আয়ত্ব করা যায়, আমেরিকার লোকজনের আচার-আচরণ চলা-ফেরা ইত্যাদি বিষয়ে ভাল করে জানার চেষ্টা চলে, সেখানে জীবন কিভাবে কাটাবে..এমন বহু বিষয়ে প্রস্তুতি চলে।
এভাবে মহা সৌভাগ্যময় কিছু আমাদের কাছে এলে তা নিয়ে আমরা যথাযথ গুরুত্ব দেই।
আমরা হয়ত অনেকেই জানিনা যে এমনই একটি মহা সৌভাগ্যময় বিষয় আমাদের কাছে আছে..!
পবিত্র কুরআন হচ্ছে সেই মহা সৌভাগ্যময় কিতাব।
كِتَابٌ أَنزَلْنَاهُ إِلَيْكَ مُبَارَكٌ لِّيَدَّبَّرُوا آيَاتِهِ وَلِيَتَذَكَّرَ أُولُو الْأَلْبَابِ ﴿٢٩﴾
সুরা সোয়াদে (৩৮:২৯) আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলছেন-
" এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসূহ লক্ষ্য করে এবং বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুধাবন করে।"
আরবি শব্দ মুবারকের অর্থ হচ্ছে- মহা সৌভাগ্যময়।
সুতরাং এই কিতাবের বরকত পেতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই যা করতে হবে-
এক. এর আয়াতগুলো অনুধাবন করা
দুই. এটা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা
তিন. উপদেশ গ্রহন করা অর্থাৎ শিক্ষা গ্রহন করা
প্রিয় বন্ধুরা,
এই মহা সৌভাগ্যবান কিতাবের সাথে আমাদের সম্পর্ক আসলে কেমন, তা একটু বুঝে নিই।
এক. সরাসরি।
কুরআন হচ্ছে আল্লাহ সুবহানু ওয়া তায়া'লার বাণী। যখনই আপনি এটা শুনবেন বা তিলাওয়াত করবেন, মনে মনে অনুধাবন করবেন যে আল্লাহ আমাকে সরাসরি সম্মোধন করছেন। তিনি আমাকে দেখছেন আমি কিভাবে তার এই কথায় প্রভাবিত হচ্ছি।
দুই. ব্যক্তিগত
কুরআনের প্রতিটি আয়াত আমার জন্য। কখনো বলবেন না যে এই আয়াত কাফির, মুশরিক বা মুনাফিক এর জন্য। আমাকে দেখতে হবে এর মধ্যে আমার জন্য কি আছে?
তিন. পরিকল্পিত
প্রতিটি শস্যকণায় কারো না কারো খাওয়ার জন্য নির্ধারিত। একইভাবে প্রতিটি আয়াত কারো না কারো শ্রবন এবং তিলাওয়াতের জন্য নির্ধারিত। এর সবই পরিকল্পিত।
চার. প্রাসঙ্গিক
কুরআন হচ্ছে একটি তাগিদ অথবা মনে করিয়ে দেয়া। তাই আল্লাহর তাগিদ হচ্ছে প্রাসঙ্গিক।
কুরআন পাঠের সময় আমাদের অবস্থা কেমন হওয়া উচিত:
১. একাগ্রতা। পাঠের সময় আয়াত পরিপূর্ণ বুঝার জন্য পূর্ণ মনোযোগ দেয়া।যে শব্দ আপনি বুঝেন তা চিহ্নিত করুন।
২. অনুধাবন। কুরআন শেখার জন্য আপনার অঙ্গীকারকে তরতাজা করে তুলুন।যদি কোন আয়াত না বুঝেন তাহলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা/এস্তেগফার চান।
৩. কল্পনা। আপনার কল্পনা শানিত করে তুলুন, বিশেষ করে কুরআন তেলাওয়াত বা সালাতে শ্রবন করার সময়। জান্নাত, জাহান্নাম, আল্লাহর নিদর্শন ইত্যাদি সম্পর্কে কল্পনা করুন আয়াতের মর্মার্থ অনুযায়ী।
৪. অনুভব। আপনার ভালবাসা, ভয়, সম্মান, কৃতজ্ঞতা ইত্যাদি অনুভূতিকে ব্যবহার করুন, যখন এ সংক্রান্ত আয়াত শুনবেন।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদেরকে এই মহা সৌভাগ্যময় কিতাবের বরকত হাসিল করার তৌফিক দান করুন। আমীন।
No comments:
Post a Comment